রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৪

বাংলাদেশ রেলওয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা যার কাছে জিম্মি ছিল বিগত দুই দশক সেই আলহাজ্জ্ব মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী এর কথা।


চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার সতেরো নং দক্ষিণ রায়শ্রী ইউনিয়নের বেরনাইয়া গ্রাম। এই গ্রামেই জন্মগ্রহন করেন মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী। উনার পৈতৃক নিবাসস্থল ও বেরনাইয়া গ্রামেই প্রাক্তন দুলির বাড়িতে যার বতমান নতুন নাম পাটোয়ারী বাড়ি। মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী সাহেবের পিতার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর একমাত্র সন্তান মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী। প্রথম স্ত্রীর অকাল মৃত্যুর পর মোস্তফা কামালের পিতা দ্বিতীয় বিয়ে করেন যেখানে দুই পুত্র এবং এক কন্যা রয়েছে।

এই প্রতিবেদনের আলোচ্য বিষয় কীরূপে মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী বাংলাদেশ রেলওয়ে দূণীতির ইতিহাসে নিজ শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেন। যা নিম্নরূপ : মোস্তফা কামাল ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখায় মনোযোগী ছিলেন এবং অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছিল তার বুদ্ধিমত্তা, চাতুরতা ও নেতৃত্ব সুলভ মনোভাব। যা তিনি তার সরকারী চাকুরী জীবনে এবং অবসরপরবতী জীবনে সফলভাবে কাজে লাগিয়েছেন।

পারিবারিক জীবনে মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র এক স্ত্রী এবং এক কন্যা রয়েছেন। উনার স্ত্রীও বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকুরী করে ২০১৩ সালে অবসর নিয়েছেন। একমাত্র মেয়ে আসমা আক্তার সুমি এম.বি.এ. শেষ করে ২০০৭ সালে বিসিএস অফিসার মোঃ শাহগির আলম এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। উক্ত যুগলদ্বয়ের দুই সন্তান রয়েছে।

মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী সুদীঘকাল যাবত বাংলাদেশ রেলওয়ের পূবাঞ্চলীয় জোনে (চট্টগ্রাম) চাকুরী করেছিলেন। রেলওয়ের সরকারী কলোনী লালখানবাজার লেডিস ক্লাব সংলগ্ন রেলওয়ের একটি বাংলোতে এক যুগের অধিক সময় তিনি বাস করেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে দূনীতিগ্রস্ত একটি অঞ্চল হলো পূবাঞ্চলীয় জোন (চট্টগ্রাম)। অব্যাহত দূনীতি, নিয়োগ বানিজ্য, রেলওয়ের সম্পদ লুট সংক্রান্ত ব্যাপারে বিগত স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ রেলওয়ে আলোচনায় আছে। যার একটি বড় নজির প্রকাশ্যভাবে স্থাপন করেছেন ( যা যথাযথভাবে মিডিয়া কাভারেজ পেয়েছে) ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তৎকালীন রেলমন্ত্রী বষীয়ান রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গুগল সাচে Bangladesh Railway Corruption কিওয়াড ব্যবহার করে Search দিলেই যা নিয়ে অসংখ্র Content পাওয়া যাবে। একটি কথা আছে বীর বাঙালি পারে না এমন কিছু নাকি এই পৃথিবীতে নেই। সব সম্ভবের এই দেশে রেলওয়ের নিয়োগ বাণিজ্যের কোটি টাকা নিয়ে কেলেঙ্কারীর শিকার হলেও সরকারী দলের আশীবাদে দূনীতি দমন কমিশন (দুদক) এর ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে আজো হেসে খেলে রাজনীতির বোলচাল/ছবক দিয়ে বেড়াচ্ছেন এই রাজনীতিবিদ। যাই হউক, পরবতীতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূবাঞ্চলীয় জোনের প্রাক্তন জি. এম. ইউসুফ আলী মৃধা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন এবং বিচার প্রক্রিয়া চলছে।

মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র যেসব অথ সম্পদের পাহাড় রয়েছে তার কোন ন্যায়সংগত, বাস্তব উৎসের সন্ধান পাওয়া যায় না। বাস্তব সত্য এটাই এসব সম্পদ বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকুরীকালীন দূনীতি ও নিয়োগ বানিজ্য থেকে অজিত বিত্ত বৈভব।

সরকারী চাকুরীকালীন সময়ে নিজ বিত্ত বৈভব শনৈ শনৈ করে বাড়লেও তা নিজ প্রাত্যহিক জীবন যাপনে প্রকাশ করেন নি বিচক্ষন মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী।

২০০৬ সালে মোস্ট করাপ্টেড এই সরকারী অফিসার বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর ২০০৬ এবং ২০০৭ সালে সৌদি আরবে পবিত্র মক্কা শরীফে হজ্জ এবং ওমরা হজ্জ পালন করেন। যার ব্যয় তৎকালীন কমপক্ষে পাঁচ লক্ষ টাকা ছিল। এছাড়াও ২০০৭ সালে তিনি নিজ গ্রামের পৈতৃক নিবাস বেরনাইয়া দুলির বাড়ি ( পাটোয়ারী বাড়ি) এর পাশে উক্ত গ্রামের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মসজিদ স্থাপন করেন। এটি আলহাজ্জ মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী সাহেবের পুরোপুরি ভাবে একক অথায়নে নিমিত মসজিদ যা তিনি নিজ মরহুমা মাতার নামে নামকরণ করেন। অত্র এলাকায় দ্বিতল ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট, টাইলস বসানো, চাকচিক্যময় মসজিদ যার তুলনা আশেপাশের চার পাঁচটি গ্রামে এখনো নেই। ২০০৮ সালে তিনি পনের লক্ষ টাকা ব্যয়ে Noah Ace ( আট সিট বিশিষ্ট ) গাড়ি ক্রয় করেন যা তিনি বিগত ছয় বছর ( ২০০৮ সাল -২০১৪ সাল) যাবত ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে আসছেন।

২০০৯ সালে তিনি ঢাকার নতুন অভিজাত এলাকা বলে পরিচিত উত্তরা আবাসিক এলাকায় নিজ মেয়ের নামে এ্যাপাটমেন্ট ক্রয় করেন। যার তৎকালীন ক্রয়মূল্য ছিল নগদ পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। এটির লোকেশন হচ্ছে : ৪থ তলা, বাড়ি নং - ০৮, রোড নং - ০৮, সেক্টর - ০৩, উত্তরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা।

বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে অবসরগ্রহনের পরে তিনি যে মোটা অংকের পেনশন একেবারে সম্পূণ উত্তোলন করেছিলেন তা ব্যাংকে মেয়াদী আমানত হিসেবে রেখে তার লভ্যাংশ দিয়ে উনার সংসার খরচ চলে। সেক্ষেত্রে যদি তিন সবোচ্চ পঁচিশ লক্ষ টাকাও সোনালী ব্যাংকে পাঁচ বছর মেয়াদী আমানত হিসেবে রেখে থাকেন তাতেও তার মুনাফা প্রতি মাসে ( ২৫ * ১০০০ ) = ২৫,০০০/- টাকার বেশি হতে পারে না। এগুলি দিয়ে উত্তরার মতো অভিজাত এলাকায় থাকা খাওয়া, সংসার খরচ ও আভিজাত্যের খরচ মেটাতেই তার হিমশিম খাবার কথা। এই অল্প (!) মাসিক লভ্যাংশ দিয়ে বিলাসবহুল Noah Ace গাড়ির জ্বালানি খরচ মেটানো, ড্রাইভারের মাসিক বেতন প্রদান করা ( কমপক্ষে ৮০০০/- টাকা ) কিছুতেই সম্ভব নয়। এছাড়াও তার এ্যাপাটমেন্টে যেসব গৃহপরিচারিকা রয়েছে তাদের বেতন মেটানোর প্রশ্ন তো রয়েছেই।

তাছাড়া মসজিদ নিমান, এ্যাপাটমেন্ট ক্রয়, Noah Ace গাড়ি ক্রয়, দুই বার হজ্জ ব্রত পালন এর আথিক সংস্থান এর উৎস কী ?

আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী এই সমস্ত প্রশ্নের কি উত্তর দিবেন ?

২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পযন্ত সময়গুলি ছিল প্রাক প্রস্তুতি মূলক সময়। মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী জানেন যে শুধু টাকা থাকলেই কাযসিদ্ধি হয় না বরং সাথে লাগে চানক্য সুলভ চাতুরী ও কুটিল বুদ্ধিমত্তা। আলহাজ্জ মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী ব্যক্তিগতভাবে মুজিবীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ এবং আওয়ামী লীগ সমথক ব্যক্তি - যা তার নিকটজন এবং ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা ভালো করেই জানেন। চাকুরী জীবনেও আওয়ামী লীগ সমথক অফিসার হিসেবে রেলওয়েতে তার পরিচিতি ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী তার নিজ গ্রাম বেরনাইয়া এলাকায় অন্যায় প্রভাব - প্রতিপত্তি বিস্তারের ক্ষেত্রে বহুদূর এগিয়ে যান। তিনি শুরু করেন গ্রাম এলাকায় কৃষিজমি ক্রয় বিক্রয়ের অভিনব ব্যবসা। যার মাধ্যমে দরিদ্র, অভাবগ্রস্ত গ্রামবাসীদের থেকে জবরদস্তি মূলক ভাবে জমি - জমা বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে ক্রয় করে পরবতীতে চড়া মূল্যে বিক্রয় করা।

আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র সাথে যেসব জমির মালিক এর ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা আছে তাদেরকে ভয় - ভীতি, হুমকি দেখিয়ে জবরদস্তি মূলক ভাবে নিজ স্বাথ আদায়ে তিনি কুন্ঠাবোধ করেন না। এমনকি আলহাজ্জ মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র নিজ নিকটাত্মীয়দেরও দাপটে বেরনাইয়া ও তৎসংলগ্ন এলাকার মানুষ ভীতির সাথে বিগত বছরগুলোতে বসবাস করে আসছে।

২০১০ সালটি আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র জন্য একটি শুভ বছর বলেই গন্য করা যেতে পারে। কেননা এই বছরেই উনার একমাত্র সন্তান আসমা আক্তার সুমির স্বামী বিসিএস ক্যাডার মোঃ শাহগির আলম শাহরাস্তি উপজেলার পাশ্ববতী কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলায় উপজেলা নিবাহী অফিসার ( ইউ এন ও ) হিসেবে দায়িত্ব নেন। এতে লাকসাম থানার ইউ এন ও মোঃ শাহগির আলম এর শ্বশুর আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী এর ভূমিদস্যুতার ক্ষেত্রে পোয়াবারো অবস্থার সৃষ্টি হয়। যা সুদে আসলে আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী সাহেবের অবৈধ প্রভাব-প্রতিপত্তি ও বিত্ত বৈভব বৃদ্ধিতেই সহায়ক হয়েছে।

১। লাকসাম ইউএনও মোঃ শাহগির আলম এর পৈতৃক আবাসস্থল / ভিটেবাড়ি চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলায় অবস্থিত।

২। আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী নিজ একমাত্র মেয়েজামাই এর নিকট থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রশাসনিক সহায়তা পেয়ে আসছেন।

৩। মোস্তফা কামালের প্লট ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসা ( যার সাথে ভূমিদস্যুতার পাথক্য নিতান্তই সামান্য ) যার কিছু কিছু জমি লাকসাম ভূমি অফিস হতে রেজিস্ট্রি করতে হয়।

৪। মেয়ে জামাইয়ের নাম ও সরকারী পদ উল্লেখপূবক প্রতিপক্ষকে ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদশন।

একটি পযালোচনাঃ আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী সাহেবের বয়স ( ২০১৪ সালে ) কমপক্ষে পঁয়ষট্টি বছর। সরকারী চাকুরী থেকে অবসর নিয়ে পবিত্র হজ্জ পালন শেষে সাধারণত ধমকম নিয়েই শেষ জীবন কাটিয়ে দেন সাধারণ মানুষজন। সেখানে না থাকে বিলাসীতার ছাপ, থাকে না কোন অবৈধ উপায়ে অথ সম্পদ জবর-দখলের মনমানসিকতা বা হীন দুনিয়াবী কামনা। বাংলাদেশ রেলওয়ে দূণীতির প্রবাদপ্রতিম পুরুষ আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী এদিক থেকে পুরোপুরিই ব্যতিক্রম। অবশ্য উনার জীবনের অতীতের বছরগুলোর কমকান্ডের সাথে মিলিয়ে দেখলে এটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়।

চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার সতেরো নং দক্ষিণ রায়শ্রী ইউনিয়নের বেরনাইয়া গ্রাম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী তার নিকটাত্মীয়দের সহযোগিতায় দেশের প্রচলিত আইন ও বিচার-ব্যবস্থার সমান্তরাল আরেকটি প্রশাসন (!) কায়েম করেছেন। বেরনাইয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় যে সমস্ত জমি মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী ও তার নিকটজনদের চোখে পড়বে সেইসব জমি / প্লট অন্য কোন ক্রেতার নিকট নায্য মূল্যে বিক্রয় করা মূল জমি মালিকের জন্য অসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী সরাসরি তার মেয়ে জামাইয়ের ( লাকসাম ইউএনও মোঃ শাহগির আলম ) নাম ও সরকারী পদ উল্লেখ করে হুমকি দেন যে শুধু মাত্র তার নিকট বাজারমূল্যের চেয়ে কম মূল্যে জমি/প্লট বিক্রয় না করিলে উক্ত জমি/ বানিজ্যিক প্লট কীরূপে লাকসাম ভূমি অফিসে রেজিষ্ট্রি হয় তা তিনি দেখিয়া ছাড়িবেন। প্রশাসনের অসহযোগিতা ও মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র নিকটাত্মীয়দের অব্যাহত হুমকির মুখে নিতান্তই কম মূল্যে মোস্তফা কামালের নিকট প্লট/জমি বিক্রয় করা ছাড়া জমি মালিকের উপায় থাকে না।

ঢাকার অদূরে নারায়নগঞ্জের কাছে শীতল ছায়া আবাসিক এলাকা নামে একটি প্রকল্পের সভাপতি আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী। এই প্রকল্পের পাঁচ কাঠার প্লট পাইয়ে দেবার নাম করে লোকজনের নিকট থেকে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিলেন মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী। পরবতীতে প্রকল্প উন্নয়ন ব্যয় হিসেবে আরও এক লক্ষ টাকা করে আদায় করেন মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী। ২০১৩ সালের প্রথমাধে জমি/প্লট হস্তান্তর করবার কথা থাকলেও অদ্যাবধি এর কোন কূল কিনারা পাওয়া যায়নি।

মধ্যযুগীয় সামন্তবাদী ব্যবস্থাঃ নিজ গ্রাম বেরনাইয়া ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলে আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী বিগত পাঁচ বছর যাবত যে ধরণের অবৈধ, বেআইনী প্রভাব বলয় সৃষ্টি করেছেন তা একমাত্র মধ্যযুগের একজন জমিদার / শাসনকতার সাথেই তুলনা করা যায়। উক্ত এলাকায় মোস্তফা কামাল যেকোন ধরণের সামাজিক দরবার, সালিশীতে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছেন প্রত্যক্ষভাবে ও পরোক্ষভাবে।

এই পঁয়ষট্টি বছর বয়সে আলহাজ্জ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী চলেন প্রধানত দুটি খুঁটির জোরে।

১। রেলওয়েতে চাকুরী কালে অবৈধ পথে আয়কৃত কালো টাকা ও স্থাবর সম্পদের পাহাড়।

২। নিজ মেয়েজামাই লাকসাম উপজেলা ইউএনও মোঃ শাহগির আলম এর নাম ও পদকে নিলজ্জ ভাবে পুঁজি করে।

মোস্তফা কামাল সাহেবের তৃতীয় শক্তি হচ্ছে বেরনাইয়া গ্রামে বসবাসরত উনার নিকটাত্মীয়গণ। যাদের পেশীশক্তি ও অন্যায় আবদার, জবর দখলের কাছে অসহায় নিরীহ, সাধারণ এলাকাবাসী।








লাকসাম উপজেলা নিবাহী কমকতা মো ছাগির আহমেদ এর শ্বশুর মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী একজন দূনীতিবাজ, প্রভাশালী রেলওয়ে কমকতা ছিলেন। ২০০৬ সালে অবসর গ্রহনের পর তিনি পর পর দুইবার পবিত্র হজ্জ্বব্রত পালন করে সরকারী চাকুরীকালে নিজ অবৈধ পথে অজিত কালো টাকা ও বিপুল পরিমান স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের সামাজিক বৈধতা প্রদান করতে সমথ হন। এছাড়াও পাঁচ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে একক অথায়নে নিজ পৈতৃক ভিটেবাড়ির পাশ্বে চাকচিক্যময় মসজিদ স্থাপন করে ধমপরায়ন এলাকাবাসীর কাছেও শ্রদ্ধার পাত্র হন। কিন্তু পরবতী বছর গুলোয়(২০০৬-২০১৪ সালে) তিনি যেসব অবৈধ হস্তক্ষেপ, অপকম, পেশীশক্তি প্রয়োগের মাধমে নতুন করে নিজ হীন স্বাথ আদায়ে সচেষ্ট হন তার জন্য তার হজ্জ্বপরবতী আট বছরে যে নতুন পাপের কালিমা তার শ্বেত-শুভ্র জীবনখাতায় যুক্ত হয়েছে তা নিতান্তই দুঃখজনক। নিজ মালিকানায় ও একক অথায়নে প্রতিষ্ঠিত মসজিদের বেতনভূক, পোষ্য আলেম সমাজ আলহাজ্জ্ব মো মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র চরিত্র/জীবননামায় যতই ধমীয় পুষ্পমন্ডিত করবার চেষ্টা করুন না কেন তাতে বাস্তবতা মিথ্যে হয়ে যায় না।
যেসব ভূক্তভোগী মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র নিদেশে উনার নিকটাত্মীয়দের দ্বারা অন্যায় ভাবে ক্ষতিগস্ত হয়েছেন তার উপযুক্ত তদন্ত ও বিচার সময়ের দাবি মাত্র।
একজন সাবেক রেলওয়ে কমকতা কীরূপে নিজ গ্রাম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অলিখিত ভাবে দেশের প্রচলিত আইন পরিপন্থী নিজস্ব আইন ও সামাজিক বিচারববস্থা কায়েম করেন?
ছেষট্টি বছর বয়সেও আলহাজ্জ্ব মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী নিজ অথ-সম্পদের বিপুল পাহাড় থাকা সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে, নিজ পেশীশক্তি ও অবৈধ ক্ষমতার দ্বারা নিকটাত্মীয়দের সহায়তায় এলাকাবাসীর সহায়-সম্পদের উপর নিজ খবরদারি ও দখলদারিত্ব কায়েম করেন?
ক্রূর বাস্তবতা হলো এর পেছনে মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র নিজ নিকটজনদের আথিক, স্থাবর-অস্থাবর হীন স্বাথ হাসিল যার দ্বারা আলহাজ্জ্ব মো মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী পরোক্ষভাবে নিজে লাভবান হচ্ছেন এবং হবেন।
বেরনাইয়া গ্রামের পাশেই ছনুয়া গ্রাম অবস্থিত যার ভূমি অফিস লাকসাম উপজেলায় অবস্থিত। উক্ত উপজেলার প্রশাসনিক সবময় কমকতা উপজেলা নিবাহী কমকতা মো ছাগির আহমেদ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র একমাত্র মেয়েজামাই হওয়ায় লাকসাম ভূমি অফিস ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরগুলি রেলওয়ের প্রাক্তন দূনীতিবাজ কালো টাকার কুমিরের হাতের মুঠোয় বলা চলে।
বিগত তিন বছর যাবত আলহাজ্জ্ব মোঃ মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী বেপরোয়া, একরোখা মনোভাবের দ্বারা নিজ হীন আথিক স্বাথ হাসিলে মনোনিবেশ করেছেন কেননা উক্ত সময়কালে কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলায় ইউ এন ও হিসেবে তার একমাত্র সন্তানের স্বামী মো ছাগির আহমেদ কমরত ছিলেন। ২০১৩-২০১৪ সালের ঘটনাপ্রবাহ সরেজমিনে যাচাই করে দেখা যায় ভূক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তদের কন্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে যার ফলে আইনী সহায়তা তো দূরের কথা বরং নিজ সহায়-সম্বল হারিয়েও নীরবে নিযাতন সহ্য করে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকেনি।
এখানে মূল ব্যাপার হচ্ছে মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী রেলওয়েতে চাকুরীকালে কীরূপে এই বিপুল অথসম্পদের মালিক হলেন তা নয়? উনি দূনীতি করেও কেন আইনের আওতার বাইরে আছেন তা-ও নয়।
বরং অবসরপরবতী বৃদ্ধ বয়সেও নিজ অঢেল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের জামিতিক হারে বৃদ্ধিসাধন, নিজ মেয়েজামাই ও নিকটাত্মীয়দের আথিকভাবে পরিপুষ্ট করাই তার শেষ জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। এই মহৎ (!) উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তিনি কোন কিছুকেই পরোয়া করেন না। শুধুমাত্র এলাকাবাসীই নয় বরং ভিন্নমতের এবং মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী'র সাথে সহমত পোষন করেন না এমন নিকটাত্মীয়গনও মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী এর খড়গ হস্তের বাইরে নন। ব্যক্তিজীবন ও সরকারী চাকুরীজীবনে আওয়ামী লীগ সমথক, মুজিববাদী চেতনা বুকে ধারন কারী এই সাবেক ডাকসাইটে রেল কমকতার বিপক্ষে কোন কথা বলা চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার সতেরো নং দক্ষিণ রায়শ্রী ইউনিয়ন ও এর তৎসংলগ্ন এলাকায় অসম্ভব ব্যাপার বৈ আর কিছুই নয়। প্রবাদে আছে কার ঘাড়ে ক'টা মাথা, নিজ পৈতৃক নিবাসস্থল বেরনাইয়া গ্রামেও ঠিক একই পরিস্থিতি বতমান। আলহাজ্জ্ব মো মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী তার নিজ কৃষিজমি বা তার নিকটাত্মীয়দের কৃষিজমির লাগোয়া/নিকটবতী কৃষিজমির মালিকের সাথে মিথ্যে দালিলিক/খতিয়ান এর সমস্যা/ বিরোধ উল্লেখ পূবক গ্রাম্য সালিশ/ দরবার বসিয়ে নিজ কালো টাকা, পেশীশক্তি ও অবৈধ ক্ষমতার দ্বারা জোরপূবক নিজ স্বাথে নিজ অবৈধ দাবি আদায় করেন ও বাস্তবায়নে জমি জমা জবরদখল করেন। যা অতীতের বছরগুলোর সাথে সাথে ২০১৪ সালেও বতমান আছে।